ভূমিকাঃ নিয়মানুবর্তিতা থেকে শৃঙ্খলার জন্ম। যে সমাজ নিয়ম অনুসারে চলে না, বা নিয়ম মানে না, সে সমাজে কোনো শৃঙ্খলাও থাকে না। অথচ, সুশৃঙ্খল না হলে মানুষের পক্ষে আত্মরক্ষা করা সম্ভব নয়, পদে পদে তার জীবন হয় বিপর্যস্ত বা বিড়ম্বিত। বিশ্বপ্রকৃতির সকল কিছুই সুনির্দিষ্ট কোন না কোন নিয়মকে অনুসরণ করে চলেছে। সৌরজগতে গ্রহ-উপগ্রহের আবর্তন, ঋতু-পরিবর্তন, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ বা মানুষের জন্ম-মৃত্যু, সবকিছুর মধ্যেই আমরা নিয়মের অনুবর্তিতা দেখতে পাই। সেই নিয়মানুবর্তিতা যে বিশ্ববিধাতা বা বিশ্বপ্রকৃতির অমোঘ বিধান।
নিয়মের সৃষ্টিঃ মানব সভ্যতার বিবর্তনের ইতিহাস অনুধাবন করলে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, স্বভাবধর্মেই মানুষ একদিন নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজন উপলব্ধি করেছিল। অর্ধ সভ্যতার স্তর থেকে মানুষ যেদিন সভ্যতার স্তরে এসে পৌঁছাল, সেইদিনই যে সমাজের ভিত গড়ল এবং সেই ভিত যাতে সুদৃঢ় হয় সেজন্য সে কতকগুলি নিয়মেরও সৃষ্টি করল। সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সমাজের মধ্যে ক্রমশ নিয়মানুবর্তিতা দেখা দিল সামাজিক শৃঙ্খলা, সুখ ও শান্তি।
নিয়মের কল্যাণঃ নিয়ম মেনে চলতে গিয়ে মানুষ দেখল যে, সমাজের সর্বত্র একটা শৃঙ্খলাভাব বিরাজ করছে। সে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে চলতে গিয়ে তার পারিবারিক ও সামাজিক জীবন হয়েছে সুন্দর ও শান্তিময়। মানুষ একদিন নিয়ম করেছিল যে, বিনা কারনে একে অপরকে আঘাত করবে না, অপরের দ্রব্য জোর করে কেরে নেবে না, পারস্পরিক সম্প্রীতির মনোভাব নিয়ে পাশাপাশি বসবাস করবে। একে অপরের দুঃখ কষ্টে ও বিপদে যথাসাধ্য সাহায্য করবে। এই ধরনের নিয়ম না থাকলে মানব সমাজের ভিত ভেঙে পড়ত, উচ্ছৃঙ্খলতা ও অনিয়মের বন্যতার পুনরাবির্ভাব হত।
শৃঙ্খলা ও আইনঃ নিয়মানুবর্তিতার প্রধান সুফল—শৃঙ্খলা। এই শৃঙ্খলার প্রয়োজন ব্যক্তিগত জীবনে, পারিবারিক জীবনে ও সামাজিক জীবনে। রাজতন্ত্রে, গণতন্ত্রে সর্বত্র শৃঙ্খলা ব্জায় থাকা অত্যাবশ্যক, যুগে যুগে মানুষ তা স্বীকার করেছে। কারণ অনিয়ম বা উচ্ছৃঙ্খলা প্রশ্রয় দিলে যে কোনো ব্যবস্থাই ভেঙে পড়ে, মানুষের অভিঞ্জতাই তার সাক্ষী। এই কারনে আইন কানুনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে মানুষ তা মেনে চলার চেষ্টা করে। আইন কানুনের কঠোরতা অনেক ক্ষেত্রে হয়তো অসুবিধা হয়, কিন্তু সমাজের বৃহত্তর স্বার্থের খাতিরে সেই কঠোরতাও প্রয়োজন। চুরি করলে শাস্তি পেতে হবে—এইরূপ কোনো সামাজিক আইন না থাকলে সমাজে কি আর নিরাপদে বাস করা চলত!
নিয়মানুবর্তিতায় জীবনের উন্নতি বিধানঃ নিয়মানুবর্তিতায় শুধু যে সমাজের উন্নতি হয় তা নয়, ব্যক্তিজীবনের উন্নতিও নির্ভর করে এই সদ্গুণের উপর। ভোরবেলায় ঘুম থেকে ওঠা, প্রাতঃকৃত্যাদি সেরে প্রাতরাশ গ্রহণ, সাংসারিক কাজকর্ম সেরে স্নানাহার, তারপর কর্মস্থলে উপস্থিত হয়ে কর্তব্যপালন, সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মেলামেশা, রাত্রের আহারের পর নিদ্রা—এই যে সাধারণ নিয়ম, সকলেই এর অনুবর্তী। সব কাজই একটা সুনির্দিষ্ট রীতি বা নিয়ম অনুসারে করতে হয়, নতুবা তাহা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় না। অসুস্থ হলে যেমন নিয়ম মেনে ওষুধ খেতে হয়, তেমনি জীবনের সকল ক্ষেত্রেই নিয়মানুবর্তিতার সুফল দেখা যায়।
নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজনীয়তাঃ পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সকল রকম জীবনেই নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজন। আর রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে নিয়মানুবর্তিতা তো অপরিহার্্য। আধুনিককালে যারা গণতন্ত্র বা ব্যক্তিস্বাধীনতার দোহাই দিয়ে নিয়ম-শৃঙ্খলা উপেক্ষা করতে চায়, তারা গণতন্ত্র বা ব্যক্তিস্বাধীনতার মূল আদর্শ থেকে বিচ্যুত। ব্যক্তিস্বাধীনতার অর্থ যে উচ্ছৃঙ্খল নয় তা উপলব্ধি করা প্রয়োজন। নিয়মশৃঙ্খলা না ভেঙে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে মানুষ তার আকাঙ্ক্ষিত বস্তু লাভ করতে পারে। সাম্রিক বাহিনীতে আমরা নিয়মানুবর্তিতার সুস্পষ্ট রূপটি দেখতে পাই। যুদ্ধে জয়লাভ করতে হলে প্রতি পদে পদে প্রতিটি সৈনিককে সুশৃঙ্খলভাবে অগ্রসর হতে হয় বলে তাদের সামরিক জীবন গড়ে ওঠে কঠোর নিয়মানুবর্তিতায়। ছাত্রজীবনেও কঠোর নিয়মানুবর্তিতা প্রয়োজন। কারণ ছাত্রজীবনই হল ভবিষ্যত কর্মজীবনের সোপান।
উপসংহারঃ নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজন স্বীকার করলেও, অনেকে আবার ব্লেন যে, কঠোর নিয়মানুবর্তিতায় মানুষের জীবন পূর্ণ বিকশিত হয় না এবং অনেক ক্ষেত্রে জীবন হয় বৈচিত্র্যহীন। কঠোর নিয়মানুবর্তিতায় ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র খর্ব হয় সত্য, কিন্তু ব্যক্তিস্বাধীনতা যখন স্বেচ্ছাচারিতায় পর্যবসিত হয়, নিয়মের কঠোরতা ভিন্ন তখন আর উপায় কি! কারণ স্বেচ্ছাচারিতায় কোনো মহৎ কর্ম সাধিত হতে পারে না। নিয়মানুবর্তিতার অভাবে শুধু যে বাহ্যজগতে অশান্তি দেখা দেয় তা নয়, নিয়ম উপেক্ষার ফলে মানসিক অশান্তি বা চিন্তাবিক্ষোভের কারণও অনেক ক্ষেত্রে ঘটে।
নিয়মের সৃষ্টিঃ মানব সভ্যতার বিবর্তনের ইতিহাস অনুধাবন করলে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, স্বভাবধর্মেই মানুষ একদিন নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজন উপলব্ধি করেছিল। অর্ধ সভ্যতার স্তর থেকে মানুষ যেদিন সভ্যতার স্তরে এসে পৌঁছাল, সেইদিনই যে সমাজের ভিত গড়ল এবং সেই ভিত যাতে সুদৃঢ় হয় সেজন্য সে কতকগুলি নিয়মেরও সৃষ্টি করল। সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সমাজের মধ্যে ক্রমশ নিয়মানুবর্তিতা দেখা দিল সামাজিক শৃঙ্খলা, সুখ ও শান্তি।
নিয়মের কল্যাণঃ নিয়ম মেনে চলতে গিয়ে মানুষ দেখল যে, সমাজের সর্বত্র একটা শৃঙ্খলাভাব বিরাজ করছে। সে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে চলতে গিয়ে তার পারিবারিক ও সামাজিক জীবন হয়েছে সুন্দর ও শান্তিময়। মানুষ একদিন নিয়ম করেছিল যে, বিনা কারনে একে অপরকে আঘাত করবে না, অপরের দ্রব্য জোর করে কেরে নেবে না, পারস্পরিক সম্প্রীতির মনোভাব নিয়ে পাশাপাশি বসবাস করবে। একে অপরের দুঃখ কষ্টে ও বিপদে যথাসাধ্য সাহায্য করবে। এই ধরনের নিয়ম না থাকলে মানব সমাজের ভিত ভেঙে পড়ত, উচ্ছৃঙ্খলতা ও অনিয়মের বন্যতার পুনরাবির্ভাব হত।
শৃঙ্খলা ও আইনঃ নিয়মানুবর্তিতার প্রধান সুফল—শৃঙ্খলা। এই শৃঙ্খলার প্রয়োজন ব্যক্তিগত জীবনে, পারিবারিক জীবনে ও সামাজিক জীবনে। রাজতন্ত্রে, গণতন্ত্রে সর্বত্র শৃঙ্খলা ব্জায় থাকা অত্যাবশ্যক, যুগে যুগে মানুষ তা স্বীকার করেছে। কারণ অনিয়ম বা উচ্ছৃঙ্খলা প্রশ্রয় দিলে যে কোনো ব্যবস্থাই ভেঙে পড়ে, মানুষের অভিঞ্জতাই তার সাক্ষী। এই কারনে আইন কানুনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে মানুষ তা মেনে চলার চেষ্টা করে। আইন কানুনের কঠোরতা অনেক ক্ষেত্রে হয়তো অসুবিধা হয়, কিন্তু সমাজের বৃহত্তর স্বার্থের খাতিরে সেই কঠোরতাও প্রয়োজন। চুরি করলে শাস্তি পেতে হবে—এইরূপ কোনো সামাজিক আইন না থাকলে সমাজে কি আর নিরাপদে বাস করা চলত!
নিয়মানুবর্তিতায় জীবনের উন্নতি বিধানঃ নিয়মানুবর্তিতায় শুধু যে সমাজের উন্নতি হয় তা নয়, ব্যক্তিজীবনের উন্নতিও নির্ভর করে এই সদ্গুণের উপর। ভোরবেলায় ঘুম থেকে ওঠা, প্রাতঃকৃত্যাদি সেরে প্রাতরাশ গ্রহণ, সাংসারিক কাজকর্ম সেরে স্নানাহার, তারপর কর্মস্থলে উপস্থিত হয়ে কর্তব্যপালন, সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মেলামেশা, রাত্রের আহারের পর নিদ্রা—এই যে সাধারণ নিয়ম, সকলেই এর অনুবর্তী। সব কাজই একটা সুনির্দিষ্ট রীতি বা নিয়ম অনুসারে করতে হয়, নতুবা তাহা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় না। অসুস্থ হলে যেমন নিয়ম মেনে ওষুধ খেতে হয়, তেমনি জীবনের সকল ক্ষেত্রেই নিয়মানুবর্তিতার সুফল দেখা যায়।
নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজনীয়তাঃ পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সকল রকম জীবনেই নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজন। আর রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে নিয়মানুবর্তিতা তো অপরিহার্্য। আধুনিককালে যারা গণতন্ত্র বা ব্যক্তিস্বাধীনতার দোহাই দিয়ে নিয়ম-শৃঙ্খলা উপেক্ষা করতে চায়, তারা গণতন্ত্র বা ব্যক্তিস্বাধীনতার মূল আদর্শ থেকে বিচ্যুত। ব্যক্তিস্বাধীনতার অর্থ যে উচ্ছৃঙ্খল নয় তা উপলব্ধি করা প্রয়োজন। নিয়মশৃঙ্খলা না ভেঙে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে মানুষ তার আকাঙ্ক্ষিত বস্তু লাভ করতে পারে। সাম্রিক বাহিনীতে আমরা নিয়মানুবর্তিতার সুস্পষ্ট রূপটি দেখতে পাই। যুদ্ধে জয়লাভ করতে হলে প্রতি পদে পদে প্রতিটি সৈনিককে সুশৃঙ্খলভাবে অগ্রসর হতে হয় বলে তাদের সামরিক জীবন গড়ে ওঠে কঠোর নিয়মানুবর্তিতায়। ছাত্রজীবনেও কঠোর নিয়মানুবর্তিতা প্রয়োজন। কারণ ছাত্রজীবনই হল ভবিষ্যত কর্মজীবনের সোপান।
উপসংহারঃ নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজন স্বীকার করলেও, অনেকে আবার ব্লেন যে, কঠোর নিয়মানুবর্তিতায় মানুষের জীবন পূর্ণ বিকশিত হয় না এবং অনেক ক্ষেত্রে জীবন হয় বৈচিত্র্যহীন। কঠোর নিয়মানুবর্তিতায় ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র খর্ব হয় সত্য, কিন্তু ব্যক্তিস্বাধীনতা যখন স্বেচ্ছাচারিতায় পর্যবসিত হয়, নিয়মের কঠোরতা ভিন্ন তখন আর উপায় কি! কারণ স্বেচ্ছাচারিতায় কোনো মহৎ কর্ম সাধিত হতে পারে না। নিয়মানুবর্তিতার অভাবে শুধু যে বাহ্যজগতে অশান্তি দেখা দেয় তা নয়, নিয়ম উপেক্ষার ফলে মানসিক অশান্তি বা চিন্তাবিক্ষোভের কারণও অনেক ক্ষেত্রে ঘটে।
No comments:
Post a Comment